বস্তুগত বিবর্তন কাকে বলে ? এই প্রকার বিবর্তনকে কি বৈধ বলা যায় ?
বস্তুগত বিবর্তন কাকে বলে ? এই প্রকার বিবর্তনকে কি বৈধ বলা যায় ?
অথবা , বস্তুগত বিবর্তন কাকে বলে ? একটি উদাহরণ দাও। একে কি প্রকৃত বিবর্তন বলা যায় ? ২+৬=৮
উত্তর :- যে বিবর্তন প্রক্রিয়ায় প্রদত্ত বচনের আকারগত বিবর্তন না করে তার অর্থের উপর বিশেষভাবে নির্ভর করা হয় এবং বাস্তব অভিজ্ঞতার সাহায্যে প্রদত্ত বচনটিকে বিবর্তন করা হয় , তাকে বস্তুগত বিবর্তন বলে।
তর্কবিজ্ঞানী বেইন (Bain ) এই প্রকার বিবর্তনের কথা বলেন যে , উদ্দেশ্য পদের বিপরীত পদকে উদ্দেশ্য রূপে এবং বিধেয় পদের বিপরীত বা বিরুদ্ধ পদকে বিধেয় রূপে গ্রহণ করা হয় এবং বাস্তব জ্ঞান বা অভিজ্ঞতার উপর নির্ভর করে একটি সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
যেমন :- যুদ্ধ হয় অমঙ্গলসূচক। (হেতুবাক্যে উদ্দেশ্য )
ஃ শান্তি হয় মঙ্গলসূচক। (সিদ্ধান্ত)
বস্তুগত বিবর্তনকে কি বৈধ বলা যায় ? অথবা, একে কি প্রকৃত বিবর্তন বলা যায় ?
বস্তুগত বিবর্তনকে বৈধ বলা যায় না। কারণ --
প্রথমত : বিবর্তনের নিয়ম অনুযায়ী হেতুবাক্য / আশ্রয়বাক্য ও সিদ্ধান্তের উদ্দেশ্য অভিন্ন হবে। বিবর্তনে হেতুবাক্য ও সিদ্ধান্তে উদ্দেশ্য একই থাকা উচিত , কিন্তু এই পদ্ধতিতে তা থাকে না।
যেমন :- যুদ্ধ হয় অমঙ্গলসূচক। (হেতুবাক্যে উদ্দেশ্য )
ஃ শান্তি হয় মঙ্গলসূচক। (সিদ্ধান্ত)
এখানে হেতুবাক্যের উদ্দেশ্য "যুদ্ধ", কিন্তু সিদ্ধান্তের উদ্দেশ্য হল "শান্তি"।
দ্বিতীয়ত : বিবর্তনের স্বীকৃত নিয়ম অনুসারে হেতুবাক্যের বিধেয় পদের বিরুদ্ধ পদকে সিদ্ধান্তের বিধেয় করতে হয়। কিন্তু এই পদ্ধতিতে সিদ্ধান্তের বিধেয়টি হেতুবাক্যের বিধেয়ের "বিরুদ্ধ পদ " নয়। এটি হল বিপরীত পদ।
যেমন :- যুদ্ধ হয় অমঙ্গলসূচক। (হেতুবাক্যে উদ্দেশ্য )
ஃ শান্তি হয় মঙ্গলসূচক। (সিদ্ধান্ত)
এখানে হেতুবাক্যের বিধেয় "অমঙ্গলসূচক" , কিন্তু সিদ্ধান্তের উদ্দেশ্য হল "মঙ্গলসূচক"।এটি হল বিপরীত পদ ।
তৃতীয়ত : বৈধ বিবরণের ক্ষেত্রে আশ্রয়বাক্য ও সিদ্ধান্তের গুন্ ভিন্ন হবে। কিন্তু এখানে তা পালন করা হয়নি।
যেমন :- যুদ্ধ হয় অমঙ্গলসূচক। (হেতুবাক্যে উদ্দেশ্য )
ஃ শান্তি হয় মঙ্গলসূচক। (সিদ্ধান্ত)
এখানে হেতুবাক্য ও সিদ্ধান্তে দুটি বচনই সদর্থক বচন ।
চতুৰ্থত : বাস্তব অভিজ্ঞতা বা বাস্তব জ্ঞান না থাকলে বস্তুগত বিবর্তন করা সম্ভব নয়। কিন্তু অবরোহ অনুমানে বাস্তব জ্ঞান নিষ্প্রয়োজন। কারণ অবরোধ অনুমানের প্রধান লক্ষ্য হল আকারগত সত্যতা অর্জন করা , বস্তুগত সত্যতা নয়। এই দৃষ্টিকোণ থেকেও বলা যায় যেতে পারে যে ,বস্তুগত বিবর্তন অবরোহ যুক্তিবিদ্যার অন্তর্গত হতে পরে না।
এইসব কারনে বস্তুগত বিবর্তনকে প্রকৃত বিবর্তন বলা যায় না।