Ads

Hira manik jwale

Hira manik jwale

হীরা মানিক জ্বলে (৩য় পর্ব) (উপন্যাস)





হীরা মানিক জ্বলে
বিভূতিভূষণ বন্দোপাধ্যায়


সুশীল বললে–সনৎ কতদূর লেখাপড়া করবি ভাবছিস?

– দেখি দাদা। বি. এসসি. পর্যন্ত পড়ে একটা কারখানায় ঢুকে কাজ শিখব। কলকবজার দিকে আমার ঝোঁক, সে তো তুমি জানই–

– আমি যদি কোনো ব্যবসায় নামি, আমার সঙ্গে থাকবি তুই?

– নিশ্চয়ই থাকব। তুমি যেখানে থাকবে, যা করবে–আমি তাতে থাকি এ আমার বড়ো ইচ্ছে কিন্তু। কী ব্যবসা করবে ভাবছ দাদা?

– আচ্ছা, কাউকে এখন এসব কিছু বলিস নে। তোকে আমি জানাব ঠিক সময়ে। তোকে নইলে আমার চলবে না। চল আজ শুয়ে পড়ি–রাত দুটো বাজে–

পরদিন সুশীল গড়ের মাঠে নির্দিষ্ট জায়গাটিতে গিয়ে একা বসে রইল। বেশ কিছুক্ষণ কেটে গেল–তবুও লোকটির দেখা নেই।


অন্ধকার নামল। আসবে না সে লোক? হয়তো নয়। কী একটা বলবে ভেবেছিল কাল, রাতারাতি তার মন ঘুরে গেছে। রাত আটটার সময় সুশীল উঠতে যাবে, এমন সময়ে পেছনে পায়ের শব্দ শুনে সে চেয়ে দেখলে।

পরক্ষণেই তার মুখ আনন্দে উজ্জ্বল হয়ে উঠল।

লোকটা ঠিক তার পেছনেই দাঁড়িয়ে।

– সেলাম, বাবুজি! মাপ করবেন, বড়ো দেরি হয়ে গেল। এই দেখুন–

লোকটার পায়ের ওপর দিয়ে ভারি একটা জিনিস চলে গিয়েছে যেন। সাদা কাপড়ের ব্যাণ্ডেজ বাঁধা–কিন্তু ব্যাণ্ডেজ রক্তে ভিজে উঠেছে।


সুশীল বললে–এঃ, কী হয়েছে পায়ে?

– এই জন্যেই দেরি হয়ে গেল বাবুজি। বাড়ি থেকে বেরিয়েছি, আর একটা ভারী হাতেঠেলা গাড়ি পায়ের ওপর এসে পড়ল। দু-জন লোক ঠেলছিল, তাদের সঙ্গে মারামারি হয়ে গেল আমার সঙ্গের লোকদের। – বোসো বোসো। তোমার পায়ে দেখছি সাঙ্ঘাতিক লেগেছে! না এলেই পারতে!

– না এলে আপনি তো হারিয়ে যেতেন। আপনাকে আর পেতাম কোথায়? রিকশা করে এসেছি বাবুজি, দাঁড়াতে পারছি নে! লোকটা ঘাসের ওপর বসে পড়ল। বললে–আজ অন্ধকার হয়ে গিয়েছে বাবুজি, আজ কোনো কাজ হবে না।

লোকটা কথা বলবে, সুশীল শুনবে। এতে দিনের আলোর কী দরকার, সুশীল বুঝতে পারলে না। বললে–কী কথা বলবে বলেছিলে–বলে যাও না?


লোকটা ধীরে ধীরে চাপা গলায় অনেক কথা বললে–মোটামুটি তার বক্তব্য এই– তার বাড়ি আগে ছিল পশ্চিমে। কিন্তু অনেকদিন থেকে সে বাংলা দেশে আছে এবং বাঙালি খালাসিদের সঙ্গে কাজ করে বাংলা শিখেছে। লোকটা মুসলমান, ওর নাম জামাতুল্লা।

একবার কয়েকজন তেলুগু লস্করের সঙ্গে সে একটা জাহাজে কাজ করে–ডাচ ইস্ট-ইণ্ডিজের বিভিন্ন দ্বীপে নারকোল-কুচি বোঝাই দিয়ে নিয়ে যেত মাদ্রাজ থেকে। সেই সময় একবার তাদের জাহাজ ডুবো-পাহাড়ে ধাক্কা লেগে অচল হয়ে পড়ে। সৌরাবায়া থেকে তাদের কোম্পানির অন্য জাহাজ এসে তাদের জাহাজের মাল তুলে নিয়ে যাবার আগে সাতদিন ওরা সেইখানে পড়েছিল। একদিন সমুদ্রের বিষাক্ত কাঁকড়া খেয়ে জাহাজসুদ্ধ লোকের কলেরা হল।

এইখানে সুশীল জিজ্ঞেস করলে–সবারই কলেরা হল?

কেউ বাদ ছিল না বাবু। খাবার পাওয়া যেত না, পাহাড়ের একটা গর্তে কাঁকড়া পেয়ে সেদিন ওরা তাই ধরেছিল। ছোটো-ছোটো–লাল কাঁকড়া। – তারপর?


– দু-জন বাদে বাকি সব সেই রাত্রে মারা গেল। বাবুজি, সে-রাতের কথা ভাবলে এখনও ভয় হয়। সতেরো জন দিশি লস্কর আর দু-জন ওলন্দাজ সাহেব–একজন মেট আর একজন ইঞ্জিনিয়ার–সেই রাত্রে সাবাড়। রইলাম বাকি কাপ্তান আর আমি। তারপর জাহাজের কাপ্তান ওকে বললে–মড়াগুলি টান দিয়ে ফেলে দাও জলে—

ও বললে–আমি মুদাফরাশ নই সাহেব, ও আমি ছোঁব না—

সাহেব ওকে গুলি করে মারতে এল। ও গিয়ে লুকোলো ডেকের ঢাকনি খুলে হোল্ডের মধ্যে। সেই রাত্রে কাপ্তান সাহেব খুব মদ খেয়ে চিৎকার করে গান গাইছে–ও সেই সময় জাহাজের বোট খুলে নিয়ে নামাতে গেল। ডেভিট থেকে বোট নামাবার শব্দে সাহেবের মদের নেশা ভাঙল না তাই নিস্তার। ডেকের ওপরে তখন দুটো মড়া পড়ে রয়েছে–মরণের বীজ জাহাজের সর্বত্র ছড়ানো, ভয়ে ও কিছু খায়নি সকাল থেকে, পাছে কলেরা হয়। সুতরাং অনাহারে ও ভয়ে খানিকটা দুর্বল হয়ে পড়েছে।

দূরে ডাঙা দেখা যাচ্ছিল, দুপুরের দিকে ও লক্ষ করেছিল। সারারাত নৌকো বাইবার পর ভোরে এসে বোট ডাঙায় লাগল। ও নেমে দেখে ডাঙায় ভীষণ জঙ্গল–ওদেশের সব দ্বীপেই এ ধরনের জঙ্গল ও জানত। লোকজনের কোনো চিহ্ন নেই কোনোদিকে। বোট ডাঙায় বেঁধে ও জঙ্গলের মধ্যে দিয়ে দু-দিন হাঁটলে, শুধু গাছের কচি পাতা আর এক ধরনের অম্ল-মধুর ফল খেয়ে। মানুষের বসতির সন্ধানে ঘুরে বেড়াতে বেড়াতে জঙ্গলের মধ্যে এক জায়গায় এসে হঠাৎ একেবারে ও অবাক হয়ে গেল।


ওর সামনে প্রকান্ড বড়ো সিংহদরজা–কিন্তু বড়ো বড়ো লতাপাতা উঠে একেবারে ঢেকে ফেলে দিয়েছে। সিংহদরজার পর একটা বড়ো পাঁচিলের খানিকটা–আরও খানিক গিয়ে একটা বড়ো মন্দির, তার চুড়ো ভেঙে পড়েছে–মন্দিরের গায়ে হিন্দু দেব-দেবীর মূর্তি বলে তার মনে হল। সে ভারতের লোক, হিন্দু দেব-দেবীর মূর্তি সে চেনে। এ ক্ষেত্রে হয়তো সে ঠিক চিনতে পারেনি–তবে তার ওইরকম বলেই মনে হয়েছিল।

অবাক হয়ে সে আরও ঘুরে ঘুরে দেখলে। জায়গাটা একটা বহুকালের পুরোনো শহরের ভগ্নস্তূপ মনে হল। কত মন্দির, কত ঘর, কত পাথরের সিংহদরজা, গভীর বনের মধ্যে বড়ো বড়ো কাছির মতো লতার নাগপাশ বন্ধনে জড়িয়ে কত যুগ ধরে পড়ে আছে। ভীষণ বিষধর সাপের আড্ডা সর্বত্র।

একটা বড়ো ভাঙা মন্দিরে সে পাথরের প্রকান্ড বড়ো মূর্তি দেখেছিল–প্রায় আট-দশ হাত উঁচু। সন্ধ্যা আসবার আর বেশি দেরি নেই দেখে তার বড়ো ভয় হয়ে গেল। এসব প্রাচীনকালের নগর শহর–জিন পরীর আচ্ছা, তেলুগু লস্করেরা যাকে ওদের ভাষায় বলে বিহ্মমুনি।

বিহ্মমুনি বড়ো ভয়ানক জিন, হিন্দুদের পুরোহিত মারা যাওয়ার পর বিহ্মমুনি হয়। এই গহন অরণ্যের মধ্যে লোকহীন পরিত্যক্ত বহু প্রাচীন নগরীর অলিতে-গলিতে ঝোপে ঝোপে ধুম্রবর্ণ, বিকটাকার, কত যুগের বুভুক্ষু বিহ্মমুনির দল সন্ধ্যার অন্ধকার পড়বার সঙ্গে সঙ্গে শিকারের সন্ধানে জাগ্রত হয়ে উঠে হাঁক পাড়ে–ম্যায় ভুখা! তাদের হাতের নাগালে পড়লে কি আর রক্ষে আছে? অতএব এখান থেকে পালানোই একমাত্র বাঁচবার পথ।

সুশীল এক মনে শুনছিল, পালিয়ে গেলে কোথায়?

সেই জঙ্গলের মধ্যে দিয়ে আবার দু-দিন তিন দিন ধরে হেঁটে সমুদ্রের ধারে পৌঁছোলাম। জাহাজে উঠব এসে এই তখন খেয়াল।


– আবার সেই মড়া-ভরতি জাহাজে কেন? – বুঝলেন না বাবুজি? যদি জাহাজে উঠি, তবে তো দেশে পৌঁছোবার ঠিকানা মেলে। নয়তো সেই জংলি মুলুকে যাব কোথায়? চারিধারে সমুদ্র, যদি জাহাজ না পাই তবে সেই জংলি মুলুকে না খেয়ে মরতে হবে–নয়তো জংলি লোকেরা খুন করে ফেলবে। বাবুজি, তখন এমন ডর, যে রাতে ঘুমোতে পারি নে। একদিন প্রকান্ড এক বনমানুষের হাতে পড়তে পড়তে বেঁচে গেলাম–নসিবের জোর খুব। অমন ধরনের জানোয়ার যে দুনিয়ায় আছে তা জানতাম না। গাছের ওপর একদল বনমানুষ ছিল–ধাড়িটা আমার দেখতে পেলে না বাবুজি, দেখলে আর বাঁচতাম না।

সুশীল মনে মনে একবার চিন্তা করে দেখলে। লোকটা মিথ্যা কথা বলছে না সত্যি বলছে, ওর এই বনমানুষের কথা তার একটা মস্ত বড়ো পরীক্ষা। সুশীল জন্তুজানোয়ার সম্বন্ধে কিছু কিছু পড়াশুনো করেছিল, বাড়িতে আগে নানারকম পাখি, বেঁজি, খরগোশ, সজারু, ও বাঁদর পুষত। গাঁয়ের লোকে ঠাট্টা করে বলত, মুস্তাফিদের চিড়িয়াখানা। এ সম্বন্ধে ইংরেজি বইও নিজের পয়সায় কিনেছিল।

ও বললে–কত বড়ো বনমানুষ?

খুব বড়ো বাবুজি। ইন্দোরের পালোয়ন রামনকিব সিং-এর চেয়েও একটা বাচ্চার গায়ে জোর বেশি। নিজের আঁখসে দেখলাম।

– কী করে দেখলে?

ডাল ফাড়লে হাত আর পা দিয়ে ধরে! আমার মাথার ওপর গাছপালার ডালগুলো তো বনমানুষে বিলকুল ভরতি হয়ে গিয়েছিল।


তবে তো তুমি সুমাত্রা দ্বীপে কিংবা বোর্নিওতে গিয়েছিলে কিংবা ওর কাছাকাছি কোনো ছোটো দ্বীপে। তুমি যে বনমানুষ বলছ–ও হচ্ছে ওরাং ওটাং-ও ছাড়া আর কোনো বনমানুষ ও দেশে থাকবে না– লোকটা হঠাৎ অত্যন্ত বিস্ময়ে সুশীলের মুখের দিকে চেয়ে বলে উঠল–দাঁড়ান–দাঁড়ান, বাবুজি, কী জায়গার নাম করলেন আপনি?

সুমাত্রা আর বোর্নিও–

ওঃ, বাবুজি, আপনি বহুৎ পড়ালিখা আদমি! এই না, কতকাল শুনিনি জানেন? আজ দশ বারো বছর। শেষের নামটা–কী বললেন বাবুজি? বোর্নিও? ঠিক। সুলু সি-র নাম জাহাজি চার্টে দেখবেন। সুলু সি-র কাছাকাছি, এপার-ওপার। কেন জানেন বাবুজি? এই নাম শুনলে আমার বহুত কথা মনে পড়ে যায়! তাজ্জব কথা! আজ দেখচেন আমায় এই গড়ের মাঠে বসে দু-একটা পয়সা ভিক্ষে করছি–কিন্তু আমি আজ–আচ্ছা, সেকথা এখন থাক।

– তারপর কী করলে বলো না! জঙ্গল থেকে এসে উঠলে আবার জাহাজে?

হ্যাঁ, উঠলাম। সেই কাপ্তান তখন মদ খেয়ে বেহুঁশ হয়ে নিজের কেবিনে চাবি দিয়ে ঘুমোচ্ছে–আমি আগে তো ভাবলাম মরে গিয়েছে। মড়াগুলি কতক কাপ্তান ফেলে দিয়েছে –কতক তখনও রয়েছে। ভীষণ বদ গন্ধ–আর সেই গরম! আমি জাহাজের কিছু খেতে পারিনে কলেরার ভয়ে। ডাঙায় গিয়ে মাছ ধরতাম–আর কচ্ছপ। – কাপ্তেন বেঁচে ছিল?


– বেঁচে ছিল, কিন্তু বেচারির মগজ খারাপ হয়ে গিয়েছিল একেবারে। তখনকার দিনে বেতার ছিল না, আমাদের জাহাজে যে অমন হয়ে গেল, সে খবর কোথাও দেওয়া যায়নি। ওসব দিকের সমুদ্রে জাহাজ বেশি চলাচল করে না–জাহাজের লাইন নয়। এগারো দিন পরে সৌরাবায়া থেকে জাহাজ যাচ্ছিল পাসারাপং,–তারা আমাদের আগুন দেখে এসে জাহাজে তুলে নিয়ে বাঁচায়।

– কীসের আগুন?

– ডুবো পাহাড়ের খানিকটা ভাটার সময় বেরিয়ে থাকত। পাটের থলে জ্বালিয়ে সেখানে রোজ আগুন করতাম–অন্য জাহাজের যদি চোখে পড়ে। তাতেই তো বেঁচে গেলাম।

এ পর্যন্ত শুনে সুশীল বুঝতে পারলে না লোকটার ভাগ্য কীসে ফিরেছিল। তবে লোকটা যে মিথ্যা কথা বলছে না, ওর কথার ধরন থেকে সুশীলের তা মনে হল। কিন্তু এইবার লোকটা যে কাহিনি বললে, তা শেষ পর্যন্ত শুনে সুশীল বিস্মিত ও মুগ্ধ হয়ে গেল– অল্পক্ষণের জন্য সারা গড়ের মাঠ, এমনকী বিরাট কলকাতা শহরটাই যেন তার সমস্ত আলোর মালা নিয়ে তার চোখের সামনে থেকে গেল বেমালুম মুছে–বহু দূরের কোনো বিপদসংকুল নীল সমুদ্রে সে একা পাড়ি জমিয়েছে বহুকালের লুকোনো হীরে-মানিক-মুক্তোর সন্ধানে–পৃথিবীর কত পর্বতে, কন্দরে, মরুতে, অরণ্যে অজানা স্বর্ণরাশি মানুষের চোখের আড়ালে আত্মগোপন করে আছে–বেরিয়ে পড়তে হবে সেই লুকোনো রত্নভান্ডারের সন্ধানে –পুরুষ যদি হও! নয় তো অফিসের দোরে দোরে মেরুদন্ডহীন প্রাণীদের মতো ঘুরে ঘুরে সেলাম বাজিয়ে চাকুরির সন্ধান করে বেড়ানোই যার একমাত্র লক্ষ্য, তার ভাগ্যে নৈব চ, নৈব চ!

এই খালাসিটা হয়তো লেখাপড়া শেখেনি, হয়তো মার্জিত নয়–কিন্তু এ সপ্ত সমুদ্রে পাড়ি জমিয়ে এসেছে, দুনিয়ার বড়ো বড়ো নগর বন্দর, বড়ো বড়ো দ্বীপ দেখতে কিছু বাকি রাখেনি–এ একটা পুরুষ মানুষ বটে–কত বিপদে পড়েছে, কত বিপদ থেকে উদ্ধার হয়েছে!


বিপদের নামে ত্রিশ হাত পেছিয়ে থাকে যারা, গা বাঁচিয়ে চলবার ঝোঁক যাদের সারাজীবন ধরে, তাদের দ্বারা না ঘুচবে অপরের দুঃখ, না ঘুচবে তাদের নিজেদের দুঃখ। লক্ষ্মী যান না কাপুরুষের কাছে, অলসের কাছে–তাদের তিনি কৃপা করেন যারা বিপদকে, বিলাসকে, আরামপ্রিয়তাকে তুচ্ছ বোধ করে।

জাহাজ সৌরাবায়া এসে পৌঁছোবার সঙ্গেসঙ্গে ওদের দুজনকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হল। সত্যিই ক্লান্তিতে, অনিদ্রায়, দুশ্চিন্তায়, অখাদ্য ভক্ষণে ওদের শরীর ভেঙে পড়েছিল। দিন পনেরো হাসপাতালে শুয়ে থাকবার পরে ক্রমশ ওর শরীর ভালো হয়ে গেল– কাপ্তেনের মস্তিষ্ক-বিকৃতির লক্ষণও ক্রমে দূর হল।

ওদের জন্যে কিছু টাকা চাঁদা উঠেছিল, ও হাসপাতাল থেকে যেদিন বাইরে পা দিলে, সেদিন এক দয়াবতী মেমসাহেব ওকে টাকাটা দিয়ে গেলেন। দুস্থ নাবিকদের থাকবার জন্যে গভর্নমেন্টের একটা বাড়ি আছে সেখানে ওকে বিনি খরচায় থাকবার অনুমতি দেওয়া হল।

এই বাড়িতে সে প্রায় দু-মাস ছিল, তারপর অন্য জাহাজে চাকরি নিয়ে ওখান থেকে চলে আসে। তারপর পাঁচ-সাত বছর কেটে গেল। ও যেমন জাহাজে কাজ করে তেমনি করে যাচ্ছে।প্রাচ্যদেশের বড়ো বড়ো বন্দরের মদের দোকান ও জুয়ার আড্ডার সঙ্গে তখন সে সুপরিচিত।

একবার তাদের জাহাজ ম্যানিলাতে থেমেছে। ও অন্যান্য লস্করদের সঙ্গে নিয়ে এক পরিচিত জুয়ার আড্ডায় উঠেছে–এমন সময়ে আড্ডাধারী এসে ওকে বললে–একবার এসো তো! তোমাদের দেশের একজন লোক তোমার সঙ্গে দেখা করতে চায়।


খুব শ্রীঘ্রই আসেছে পরবর্তী পর্ব

যদি তোমাদের এগুলো ভালো লাগে তাহলে কোমান্ড কর আর শেয়ার কর। তাহলে আমি আরও লিখব তোমাদের জন্য ।


ধন্যবাদ
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url