নিরপেক্ষ ন্যায়ের প্রথম দুটি নিয়ম লঙ্ঘনে কী কী দোষের উদ্ভব হয়
নিরপেক্ষ ন্যায়ের প্রথম দুটি নিয়ম লঙ্ঘনে কী কী দোষের উদ্ভব হয় (HS Philosophy)
'নিরপেক্ষ ন্যায়ের প্রথম দুটি নিয়ম লঙ্ঘনে কী কী দোষের উদ্ভব হয়'
1) নিরপেক্ষ ন্যায়ের প্রথম দুটি নিয়ম লঙ্ঘনে কী কী দোষের উদ্ভব হয় তা উদাহরণ-সহ আলোচনা করো।
নিরপেক্ষ ন্যায়ের বৈধ ন্যায় বিচার করার জন্য মোট দশটি সাধারণ নিয়ম আছে। এই নিয়মগুলি না মানলে পরে দোষ দেখা দেয়। এখানে প্রথম এবং দ্বিতীয় নিয়মকে লঙ্ঘন করলে কি দোষ ঘটে তা নিম্নে আলোচনা করা হল।
প্রথম নিয়মের লঙ্ঘনজনিত দোষ:-
নিরপেক্ষ ন্যায়ের প্রথম নিয়মটি হল প্রত্যেকটি ন্যায়ের কেবলমাত্র তিনটি বচনই থাকবে, তার কমও নয় আর বেশিও নয়। নিয়ম লঙ্ঘন করলে যে দোষ ঘটে তা হল
১)অমাধ্যম অনুমানজনিত দোষ আর একটি
২)ন্যায় শৃঙ্ঘলজনিত দোষ
১)অমাধ্যম অনুমানজনিত দোষ
ন্যায় অনুমানের তিনটি বচন থাকে যার মধ্যে রয়েছে দুটি আশ্রয়বাক্য এবং আর একটি হল সিদ্ধান্ত। যদি একটি কম থাকলে অর্থাৎ, দুটি বচন থাকলে তাহলে যে দোষ হয় তাকেই বলা হয় অমাধ্যম অনুমানজনিত দোষ।
কারণ - একটি বচন থেকে সরাসরি সিদ্ধান্তে আনা যায় না।
যেমন-
যুক্তিবাক্য
L.F. "I" : কোনো কোনো ফুল হয় লাল।
সিদ্ধান্ত
... L.F. "I" : কোনো কোনো লাল বর্ণ হয় ফুল।
ব্যাখ্যা
এখানে একটিমাত্র যুক্তিবাক্য থেকে সিদ্ধান্তটি গ্রহণ করা হয়েছে বলে একে অমাধ্যম অনুমান বলা হয়। এই অমাধ্যম অনুমানের প্রাধান্য দেওয়া যাবে না। কারণ ন্যায় অনুমান হল মাধ্যম অনুমান। সুতরাং এক্ষেত্রে অনুমানটি অমাধ্যমরূপে গন্য হওয়ায় উপরিউক্ত দোষ হয়েছে।
২)ন্যায় শৃঙ্ঘলজনিত দোষ
ন্যায় অনুমানে তিনটির বেশির বচন থাকলও এই দোষ দেখা দেয়।
যুক্তিবাক্য
L.F. "A" : পর্বতটি হয় অগ্নিযুক্ত ।
L.F. "A" : পর্বতটি হয় ধোঁয়াযুক্ত।
L.F. "A" : সকল ধোঁয়াযুক্ত ক্ষেত্রে হয় অগ্নিযুক্ত ক্ষেত্রে।
L.F. "A" : পর্বতটি হয় ধোঁয়াযুক্ত ক্ষেত্রে।
সিদ্ধান্ত
... L.F. "A" : পর্বতটি হয় অগ্নিযুক্ত ক্ষেত্রে।
ব্যাখ্যা
এখানে মোট পাঁচটি বচন রয়েছে। কিন্তু ন্যায়ের নিয়ম অনুযায়ী তিনটি বচন থাকা দরকার তার বেশিও নয়। তাই বেশি বচন থাকার জন্য দোষ ঘটেছে। বেশি বচন থেকে সিদ্ধান্ত গ্রহনের জন্য ন্যায় শৃঙ্ঘলজনিত দোষ ঘটেছে।
দ্বিতীয় নিয়মের লঙ্ঘনজনিত দোষ
ন্যায় অনুমানের নিয়ম অনুযায়ী তিনটি পদ থাকবে কিন্তু যদি তিনটির বেশি হয় তাহলে যে দোষ ঘটে তা হল চারিপদ বা চতুষ্পদঘটিত দোষ বলা হয়।
প্রধান যুক্তিবাক্য
L.F. "A" : মানুষ হয় পাপ সৃষ্টিকারী।
অপ্রধান যুক্তিবাক্য
L.F. "A" :ঈশ্বর হন সৃষ্টিকারী।
সিদ্ধান্ত
L.F. "A" :ঈশ্বর হন পাপ সৃষ্টিকারী।
ব্যাখ্যা
ন্যায় অনুমান অনুযায়ী তিনটি পদ থাকবে,তার বেশিও নয়। যদি বেশি থাকে অর্থাৎ, চারটি পদ থাকে তাহলে তাকে চারিপদ বা চতুষ্পদঘটিত দোষ ঘটবে। এখানে কিন্তু চারটি পদ রয়েছে। এই চারটি পদ হল --
1. মানুষ,
2. মানুষ সৃষ্টিকারী,
3. ঈশ্বরএবং
4. পাপ সৃষ্টিকারী